ছয় দফা বাস্তবায়নে নতুন কর্মসূচির ঘোষণা নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে বৈষম্য বিরোধী মেডিকেল টেকনোলজি ও ফার্মেসি ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের


 




স্বতন্ত্র পরিদফতর গঠন ও ডিপ্লোমাধারীদের ১০তম গ্রেড পদমর্যাদা প্রদানসহ ছয় দফা দাবি জানিয়েছেন মেডিকেল টেকনোলজি ও ফার্মেসির ছাত্ররা। এছাড়াও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গাইডলাইন অনুযায়ী প্রতি একজন চিকিৎসকের বিপরীতে পাঁচজন টেকনোলজিস্টদের পদায়নের আহ্বান জানিয়েছেন তারা।


শনিবার (১৯ অক্টোবর) ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজি অডিটোরিয়ামে বৈষম্যবিরোধী মেডিকেল টেকনোলজি ও ফার্মেসি সংগ্রাম পরিষদ আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি জানানো হয়। এ সময় তারা পাঁচ দিনের ধারাবাহিক কর্মসূচি ঘোষণা করেন।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনের যুগ্ম আহ্বায়ক সালাহউদ্দিন। তিনি বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা গাইডলাইন অনুযায়ী একজন চিকিৎসকের বিপরীতে তিনজন নার্স ও পাঁচজন মেডিকেল টেকনোলজিস্ট থাকা প্রয়োজন। অথচ দীর্ঘ ১৪ বছরেরও অধিক সময় প্রশাসনিক জটিলতায় মেডিকেল টেকনোলজিস্টদের নিয়োগ কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। ফলে সরকারি চাকরিতে কর্মরত মেডিকেল টেকনোলজিস্টদের সংখ্যা মাত্র চার হাজার ১০৬ জন এবং মোট পদের সংখ্যা পাঁচ হাজার ৯৭৫টি। চিকিৎসক ও নার্সের বিদ্যমান সংখ্যার অনুপাত যেটি হওয়ার কথা ছিল ৮০ হাজারেরও বেশি।


নিয়োগ জটিলতার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, দীর্ঘদিন নিয়োগ প্রক্রিয়া বন্ধ থাকায় টেকনোলজিস্টদের একটি বড় অংশের সরকারি চাকরিতে আবেদন বয়সসীমা পার হয়ে গেছে। নিজস্ব কোনো দফতর না থাকায় এ দক্ষ অথচ বেকার জনগোষ্ঠী একপ্রকার হতাশাগ্রস্ত জীবন যাপন করছে। এ নিয়োগ জটিলতা কেটে গেলেও ২০১৩ সালে নিয়োগ প্রক্রিয়াটি এখনো নানাবিধ খোঁড়া অজুহাতে আটকে রাখা হয়েছে। সর্বশেষ ২০২৩ সালের ১ আগষ্ট নবসৃষ্ট পদে ৮৮৯ জনকে নিয়োগ দেয় স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ। যা প্রয়োজনের তুলনায় নিতান্তই নগণ্য।


এই খাতে বৈষম্য তুলে ধরে তিনি বলেন, স্বাস্থ্য সেবা ও শিক্ষা উভয় বিভাগের অধীনস্থ মেডিকেল টেকনোলজি শিক্ষা এবং মেডিকেল টেকনোলজিস্ট পেশাজীবীদের পেশাগত লক্ষ্য বাস্তবায়ন, বদলি, পদোন্নতি, উচ্চ শিক্ষা, প্রশিক্ষণ, দক্ষতা বৃদ্ধি, সমন্বয়ের জন্য কোনো স্বতন্ত্র উইং, পরিদফতর কিংবা অধিদফতর নেই। স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদফতরের অধীনে পরিচালিত দেশে সরকারি পর্যায়ে ২৩টি এবং বেসরকারি পর্যায়ে ৬৫টিরও অধিক আইএইচটি রয়েছে। যেখানে আটটি অনুষদে ডিপ্লোমা ইন মেডিকেল টেকনোলজি ও ফার্মেসি পাস ডিগ্রিধারীদের চাকরিসংক্রান্ত সার্বিক বিষয়য়াদি, তাদের বদলি-পদোন্নতিসংক্রান্ত বিষয় দেখভাল করার জন্য স্বতন্ত্র কোনো ব্যবস্থা নেই। মেডিকেল টেকনোলজি ও ফার্মেসি সেক্টরে পাস করা ৫০ হাজাররেও বেশি জনবলের পরিকল্পনামাফিক নিয়ন্ত্রণের জন্য কোনো প্রকার দফতরের ব্যবস্থাও নেই।


দশম গ্রেডের দাবিসংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ১০ম গ্রেডের মানে উন্নয়নের জন্য আমাদের ডিপ্লোমা চার বছর মেয়াদি করা হয়েছে। এছাড়া আমাদের এই টেকনোলজিস্টদের বিজ্ঞান বিভাগ থেকে আসা বাধ্যতামূলক ও আমাদের বায়োলজি ও বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এছাড়া অপরাপর ডিপ্লোমাধারীরা দশম গ্রেডে চাকরি করেন। অথচ আমাদের গ্রেড ১১। সে হিসেবে আমাদের দশম গ্রেড পাওয়াটা অনেক যৌক্তিক।  



 


পরবর্তী কর্মসূচি


১. ২০ অক্টোবর সকল জেলার আইএইচপিসমূহে মানববন্ধন এবং স্মারকলিপি প্রদান।


২. ২১ অক্টোবর ২০২৪ নিজ নিজ জেলার প্রেসক্লাবে মানববন্ধন এবং স্মারকলিপি প্রদান।


৩. ২২ অক্টোবর নিজ জেলার জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন এবং স্মারকলিপি প্রদান।


৪. ২৩ অক্টোবর নিজ জেলার জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন এবং কালো ব্যাজ ধারণ।


৫. ২৪ অক্টোবর জেলার জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ।




একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ