ঢাকা আইএইচটি কে বিশ্ববিদ্যালয় রূপান্তর করা এবং অন্যান্য IHT গুলোকে কলেজ পর্যায়ে উন্নীত করে বিষয়ভিত্তিক দক্ষ মেডিকেল টেকনোলজিস্ট শিক্ষকদেরকে লেকচারার থেকে প্রফেসর পর্যন্ত বিভিন্ন পদে পদায়ন করতে হবে।(লেখা মোঃ আবু বক্কর সিদ্দিক)



ইনস্টিটিউট অফ হেলথ টেকনোলজি (IHT) গুলোর বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থায় যে সংকট চলছে, তা অত্যন্ত চিন্তার বিষয়। মূলত, বিষয়ভিত্তিক দক্ষ মেডিকেল টেকনোলজিস্ট শিক্ষকদের অভাবে এবং অন্যান্য পেশার ডাক্তারদের দ্বারা পাঠদান করানোর কারণে শিক্ষার মান ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এছাড়াও, পর্যাপ্ত ব্যবহারিক ও প্র্যাকটিক্যাল শিক্ষা ব্যবস্থা না থাকায় শিক্ষার্থীরা প্রয়োজনীয় দক্ষতা অর্জনে ব্যর্থ হচ্ছে। এই সমস্যার সমাধানে ঢাকা IHT কে বিশ্ববিদ্যালয় রূপান্তর করা এবং অন্যান্য IHT গুলোকে কলেজ পর্যায়ে উন্নীত করার প্রস্তাব অত্যন্ত যৌক্তিক এবং সময়োপযোগী। চলুন এই বিষয়ে সুনির্দিষ্টভাবে এবং বিস্তারিত আলোচনা করি:


১. শিক্ষার গুণগত মানের উন্নয়ন:


বিশেষজ্ঞ শিক্ষকের প্রয়োজনীয়তা:

মেডিকেল টেকনোলজি শিক্ষার বিশেষ বৈশিষ্ট্য হলো এটি অত্যন্ত প্রযুক্তিগত এবং বিষয়ভিত্তিক জ্ঞান এবং দক্ষতার ওপর নির্ভরশীল। ডাক্তারদের দ্বারা সাধারণ চিকিৎসা সম্পর্কিত বিষয় পড়ানো সম্ভব হলেও, টেকনোলজিস্ট শিক্ষার ক্ষেত্রে এটি যথেষ্ট নয়। টেকনোলজিস্টদের ক্ষেত্রে প্রত্যেকটি বিভাগ যেমন- ল্যাব টেকনোলজি, ফিজিওথেরাপি, এক্স-রে টেকনোলজি, ডেন্টাল টেকনোলজি ইত্যাদি অত্যন্ত বিশেষায়িত এবং ব্যবহারিক দক্ষতা প্রয়োজন।

এক্ষেত্রে, বিষয়ভিত্তিক দক্ষ টেকনোলজিস্ট শিক্ষকদের অভাবে শিক্ষার্থীরা সঠিকভাবে শিক্ষা পাচ্ছে না এবং প্রয়োজনীয় ব্যবহারিক দক্ষতা অর্জনে ব্যর্থ হচ্ছে। ফলে, তাদের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা এবং কর্মক্ষেত্রের বাস্তব অভিজ্ঞতার মধ্যে বড় একটি ফাঁক থেকে যাচ্ছে। এই ফাঁক পূরণের জন্য বিষয়ভিত্তিক শিক্ষক নিয়োগ অপরিহার্য।


বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরিত করার যৌক্তিকতা:

ঢাকা IHT কে বিশ্ববিদ্যালয় রূপান্তর করা হলে বিষয়ভিত্তিক শিক্ষার মান অনেক উন্নত হবে। একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের কাঠামোতে গবেষণামূলক কার্যক্রম পরিচালনার সুযোগ থাকে যা শুধুমাত্র পাঠ্যসূচির মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে না। গবেষণার সুযোগ বৃদ্ধি পাওয়ায় বিভিন্ন নতুন টেকনোলজি এবং পদ্ধতি সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করা সম্ভব হবে, যা শিক্ষার্থীদের আন্তর্জাতিক মানের শিক্ষায় উত্তীর্ণ হতে সহায়তা করবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরিত হলে সুনির্দিষ্ট বিভাগ ভিত্তিক শিক্ষক নিয়োগ করা যাবে, যারা গবেষণা এবং ব্যবহারিক দক্ষতার সমন্বয়ে শিক্ষার্থীদের জন্য উন্নত মানের শিক্ষা প্রদান করবেন। ফলে, শিক্ষার্থীরা আন্তর্জাতিক মানের প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে পারবে।


২. ব্যবহারিক ও প্র্যাকটিক্যাল শিক্ষার অভাব এবং এর সমাধান:


মেডিকেল টেকনোলজি একটি ব্যবহারিক ভিত্তিক বিষয়, যেখানে শিক্ষার্থীদের বাস্তব জীবনের পরিস্থিতিতে কাজ করার দক্ষতা থাকতে হবে। কিন্তু, বর্তমান শিক্ষাব্যবস্থায় পর্যাপ্ত প্র্যাকটিক্যাল ক্লাস এবং সরঞ্জামের অভাবে শিক্ষার্থীরা সেই দক্ষতা অর্জন করতে পারছে না।

এই ব্যবস্থায় পরিবর্তন আনতে হলে উন্নতমানের ল্যাবরেটরি স্থাপন, ব্যবহারিক শিক্ষার উপর জোর দেওয়া এবং সর্বশেষ প্রযুক্তিগত সরঞ্জাম ব্যবহারের সুযোগ তৈরি করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয় এবং কলেজে উন্নীত হলে এই ধরনের আধুনিক ল্যাবরেটরি এবং প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপনের জন্য বাজেট বরাদ্দ বাড়ানো যাবে এবং বিষয়ভিত্তিক শিক্ষকদের তত্ত্বাবধানে প্র্যাকটিক্যাল শিক্ষার মান উন্নত হবে।


৩. ঢাকা IHT কে বিশ্ববিদ্যালয় রূপান্তরের প্রয়োজনীয়তা:


বিশ্ববিদ্যালয় ভিত্তিক উন্নয়ন:

ঢাকা IHT কে একটি পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরিত করা হলে এখানে স্নাতক, স্নাতকোত্তর এবং গবেষণামূলক ডিগ্রির ব্যবস্থা চালু করা সম্ভব হবে। বর্তমানে মেডিকেল টেকনোলজির জন্য দেশে উন্নতমানের গবেষণা প্রতিষ্ঠান নেই বললেই চলে। তবে একটি বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে রূপান্তরিত হলে উন্নত গবেষণার সুযোগ তৈরি হবে, যা এই খাতকে আরো সমৃদ্ধ করবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে থাকা শিক্ষার্থীরা শুধু টেকনিশিয়ান হিসেবে নয়, বরং গবেষক এবং উদ্ভাবক হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করতে পারবে। তাছাড়া, শিক্ষাক্রমও আন্তর্জাতিক মান অনুযায়ী হালনাগাদ করা সম্ভব হবে, যা শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ কর্মক্ষেত্রে সহায়ক হবে।


৪. অন্যান্য IHT গুলোকে কলেজে রূপান্তরের যৌক্তিকতা:


ঢাকা IHT কে বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে উন্নীত করার পাশাপাশি দেশের অন্যান্য IHT গুলোকে কলেজে রূপান্তরিত করা একটি কার্যকর পদক্ষেপ হবে। কলেজে রূপান্তরিত হলে স্থানীয় শিক্ষার্থীরা উন্নতমানের শিক্ষা গ্রহণের সুযোগ পাবে এবং স্থানীয় পর্যায়ে প্রযুক্তিগত দক্ষতা বৃদ্ধি পাবে।

কলেজগুলোতে পর্যাপ্ত বিষয়ভিত্তিক শিক্ষক নিয়োগ এবং ল্যাবরেটরি স্থাপনের মাধ্যমে শিক্ষার মান উন্নত করা যাবে। এর ফলে দেশের প্রতিটি অঞ্চলে স্বাস্থ্য সেবা ব্যবস্থার উন্নয়ন ঘটবে এবং শিক্ষার্থীরা নিজ নিজ অঞ্চলে উন্নত মানের প্রশিক্ষণ নিতে সক্ষম হবে।


৫. বিষয়ভিত্তিক শিক্ষকের নিয়োগ এবং এর যৌক্তিকতা:


মেডিকেল টেকনোলজির প্রতিটি বিষয়ই বিশেষায়িত এবং পৃথক দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা দাবি করে। এই বিষয়গুলোতে সাধারণ ডাক্তার বা অন্য পেশার লোকদের দ্বারা পাঠদান করানো হলে শিক্ষার্থীরা তাদের প্রয়োজনীয় দক্ষতা অর্জন করতে ব্যর্থ হবে।

বিষয়ভিত্তিক শিক্ষকেরা শিক্ষার্থীদের নির্দিষ্ট টেকনোলজির ক্ষেত্রে গভীর জ্ঞান এবং প্রয়োজনীয় ব্যবহারিক দক্ষতা প্রদান করতে সক্ষম হবেন, যা ছাত্রদেরকে একজন দক্ষ পেশাদার হিসেবে গড়ে তুলবে। এ কারণে, প্রতিটি IHT এবং কলেজ পর্যায়ে পর্যাপ্ত এবং যোগ্য বিষয়ভিত্তিক শিক্ষক নিয়োগ অত্যন্ত জরুরি।


৬. উন্নত শিক্ষাক্রম ও কাঠামো:


বিশ্ববিদ্যালয় এবং কলেজ পর্যায়ে উন্নীত হলে শিক্ষাক্রমের আধুনিকীকরণ এবং প্রয়োজনীয় সংস্কার করা সম্ভব হবে। বর্তমান সময়ে স্বাস্থ্যসেবা এবং প্রযুক্তির ক্রমাগত উন্নয়নের কারণে শিক্ষাক্রমকে আপডেট রাখা অপরিহার্য। একটি বিশ্ববিদ্যালয় কাঠামোতে বৈজ্ঞানিক গবেষণা, টেকনোলজির উদ্ভাবন এবং বাস্তব জীবনভিত্তিক শিক্ষা একীভূত করা সম্ভব হবে।


এর পাশাপাশি মেডিকেল টেকনোলজিস্ট শিক্ষকদেরকে লেকচারার থেকে প্রফেসর পর্যন্ত বিভিন্ন পদে পদায়ন করার প্রয়োজনীয়তা এবং যৌক্তিকতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং স্পষ্ট। যেহেতু মেডিকেল টেকনোলজি একটি বিশেষায়িত খাত, তাই এই খাতে উচ্চমানের শিক্ষাদান এবং গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনার জন্য শিক্ষক নিয়োগ ও উন্নয়ন জরুরি। লেকচারার থেকে শুরু করে প্রফেসর পর্যন্ত পদায়নের মাধ্যমে শিক্ষার গুণগত মান বৃদ্ধি, গবেষণার উন্নয়ন, এবং টেকনোলজিস্টদের পেশাগত মর্যাদা ও দক্ষতা বৃদ্ধির সুযোগ তৈরি করা যায়।


১. বিষয়ভিত্তিক বিশেষজ্ঞতার উন্নয়ন:


প্রাথমিক নিয়োগ (লেকচারার) এবং এর প্রয়োজনীয়তা:

মেডিকেল টেকনোলজিস্টদের জন্য লেকচারার হিসেবে কাজ শুরু করা হচ্ছে শিক্ষাদানের প্রথম ধাপ। লেকচারাররা সাধারণত স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারী হন এবং বিষয়ভিত্তিক জ্ঞানকে শিক্ষার্থীদের কাছে সরাসরি উপস্থাপন করতে পারেন। তবে লেকচারারদের অভিজ্ঞতা এবং গবেষণার সুযোগ সীমিত থাকে।

লেকচারারদের মূল ভূমিকা থাকে শিক্ষার্থীদের প্রাথমিক জ্ঞান প্রদান এবং বিষয়ের মূল ধারণা শেখানো। তবে, একজন লেকচারারের দক্ষতা এবং জ্ঞান বৃদ্ধির সাথে সাথে উচ্চতর পদে উন্নীত হওয়ার সুযোগ থাকা উচিত, যাতে তারা শিক্ষাক্ষেত্রে আরও গভীর গবেষণায় যুক্ত হতে পারেন এবং ছাত্রদের উন্নত শিক্ষা দিতে পারেন।


সহকারী প্রফেসর (Assistant Professor) পদায়নের যৌক্তিকতা:

যখন একজন লেকচারার প্রয়োজনীয় অভিজ্ঞতা এবং শিক্ষাদান দক্ষতা অর্জন করেন, তখন তাকে সহকারী প্রফেসর হিসেবে পদোন্নতি দেওয়া উচিত। সহকারী প্রফেসরদের দায়িত্ব শুধু তত্ত্বগত জ্ঞান প্রদান নয়, তারা গবেষণায় অংশগ্রহণ করতে পারেন এবং শিক্ষার্থীদের প্র্যাকটিক্যাল শিক্ষা দানে আরও নিবিড়ভাবে জড়িত থাকেন।

এই পদে উন্নীত হলে একজন শিক্ষক আরও উন্নতমানের গবেষণা করতে পারেন, যা মেডিকেল টেকনোলজি খাতে নতুন নতুন উদ্ভাবন আনতে সহায়ক হতে পারে। এটি শিক্ষার্থীদের গবেষণার প্রতি আগ্রহী করে তোলে এবং তাদেরকে বাস্তব দক্ষতার দিকে নিয়ে যায়।


সহযোগী প্রফেসর (Associate Professor) এবং প্রফেসর পদায়নের যৌক্তিকতা:

সহযোগী প্রফেসর এবং প্রফেসর পদে উন্নীত হওয়া শিক্ষকদের জন্য একটি বড় মাইলফলক। এই স্তরে একজন শিক্ষক দীর্ঘমেয়াদী গবেষণা প্রকল্পের দায়িত্ব নিতে পারেন এবং বিষয়ভিত্তিক নতুন পদ্ধতি ও টেকনোলজির উদ্ভাবনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারেন।

প্রফেসর পদে থাকা একজন শিক্ষক শুধুমাত্র পাঠদান এবং গবেষণায় সীমাবদ্ধ থাকেন না, বরং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির কৌশলগত উন্নয়ন, শিক্ষাক্রমের আধুনিকীকরণ এবং নতুন শিক্ষাকৌশল প্রণয়নের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। এই ধরণের পদোন্নতি শিক্ষকের ব্যক্তিগত দক্ষতার পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানের সার্বিক মানোন্নয়নে সহায়ক হয়।


. পেশাগত মর্যাদা এবং টেকনোলজিস্টদের স্বীকৃতি বৃদ্ধি


মেডিকেল টেকনোলজিস্টদের জন্য পৃথক পদায়নের সুযোগ থাকলে তাদের পেশাগত মর্যাদা বৃদ্ধি পায়। স্বাস্থ্যসেবা খাতে টেকনোলজিস্টরা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন, তবে তাদের পেশাগত মর্যাদা প্রায়শই ডাক্তারদের তুলনায় কম থাকে।

যদি টেকনোলজিস্টদের জন্যও লেকচারার থেকে প্রফেসর পর্যন্ত পূর্ণাঙ্গ একাডেমিক ক্যারিয়ার পথ তৈরি করা হয়, তাহলে তা তাদের স্বীকৃতি এবং মর্যাদা বাড়াবে। এটি শিক্ষকদের মধ্যে পেশাদারিত্ব এবং কর্মে উদ্দীপনা তৈরি করবে। ফলে শিক্ষার্থীরাও টেকনোলজিস্ট পেশাকে সম্মানের সাথে গ্রহণ করবে এবং আরও উৎসাহিত হবে।


৩. গবেষণার উন্নয়ন এবং প্রাতিষ্ঠানিক অবকাঠামো:


গবেষণামূলক শিক্ষার প্রসার:

মেডিকেল টেকনোলজির ক্ষেত্রে গবেষণা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ প্রযুক্তিগত খাত প্রতিনিয়ত পরিবর্তনশীল এবং উন্নত হচ্ছে। তাই, মেডিকেল টেকনোলজিস্ট শিক্ষকদের লেকচারার থেকে প্রফেসর পর্যন্ত ধাপে ধাপে পদোন্নতি দেয়া হলে, তারা ক্রমাগতভাবে তাদের গবেষণার দক্ষতা বৃদ্ধি করতে পারেন এবং এই খাতের নতুন পদ্ধতি ও প্রযুক্তির বিকাশে অবদান রাখতে পারেন।

বিশেষত, প্রফেসর এবং সহযোগী প্রফেসর পর্যায়ের শিক্ষকদের নেতৃত্বে বিভিন্ন গবেষণা প্রকল্প পরিচালনা করা যায়, যা শিক্ষার্থীদের গবেষণায় অংশগ্রহণের সুযোগ দেয়। এটি শিক্ষার্থীদের বাস্তব জ্ঞান এবং প্রযুক্তিগত দক্ষতা বাড়াতে সাহায্য করে।

বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের শিক্ষাক্রমের উন্নয়ন:

লেকচারার থেকে প্রফেসর পর্যন্ত শিক্ষক নিয়োগ এবং পদোন্নতির মাধ্যমে শিক্ষাক্রম উন্নয়ন করা যায়। শিক্ষার মান বৃদ্ধির জন্য শিক্ষকদের মতামত এবং গবেষণার উপর ভিত্তি করে পাঠ্যক্রমের পরিবর্তন বা আধুনিকীকরণ প্রয়োজন। এতে শিক্ষার্থীরা যুগোপযোগী জ্ঞান এবং ব্যবহারিক দক্ষতা অর্জন করতে পারে।

প্রফেসর পদে থাকা ব্যক্তিরা শিক্ষাক্রমের পরিচালনা, পর্যালোচনা এবং উন্নয়নে নেতৃত্ব প্রদান করতে পারেন, যা একটি প্রতিষ্ঠানের সার্বিক শিক্ষার মানকে আরও শক্তিশালী করে তুলবে।

৪. শিক্ষার গুণগত মান বৃদ্ধি:

লেকচারার থেকে প্রফেসর পর্যন্ত ধাপে ধাপে পদোন্নতির মাধ্যমে শিক্ষকদের মধ্যে জ্ঞান, অভিজ্ঞতা এবং নেতৃত্বের ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। শিক্ষার্থীরা লেকচারার পর্যায়ে মৌলিক জ্ঞান অর্জন করার পর, সহযোগী প্রফেসর এবং প্রফেসরদের কাছ থেকে আরও উন্নত এবং গভীর জ্ঞান ও দক্ষতা অর্জনের সুযোগ পায়।

এই প্রক্রিয়ায় শিক্ষার্থীরা একটি ক্রমবর্ধমান উন্নত শিক্ষার অভিজ্ঞতা লাভ করে, যেখানে তারা বিষয়টির বিভিন্ন স্তরে দক্ষতা অর্জন করতে সক্ষম হয়।

৫. শিক্ষকের পেশাগত উন্নয়ন এবং মানোন্নয়ন:

যদি টেকনোলজিস্ট শিক্ষকদের শুধুমাত্র লেকচারার পদে সীমাবদ্ধ রাখা হয়, তবে তাদের পেশাগত উন্নয়ন সীমিত থাকবে। তবে, লেকচারার থেকে প্রফেসর পর্যন্ত পদোন্নতির ব্যবস্থা থাকলে শিক্ষকেরা উচ্চতর শিক্ষায় অংশগ্রহণ, গবেষণা কার্যক্রমে যুক্ত হওয়া এবং পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধির সুযোগ পাবেন।

এছাড়া, পদোন্নতির মাধ্যমে শিক্ষকদের মধ্যে প্রতিযোগিতা এবং উদ্দীপনা তৈরি হবে, যা তাদের ব্যক্তিগত এবং পেশাগত উন্নয়নে সহায়ক হবে।মেডিকেল টেকনোলজিস্ট শিক্ষকদেরকে লেকচারার থেকে প্রফেসর পর্যন্ত পদায়ন করার প্রয়োজনীয়তা এবং যৌক্তিকতা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এটি শিক্ষার গুণগত মান বৃদ্ধি, গবেষণার প্রসার, শিক্ষাক্রম উন্নয়ন, পেশাগত মর্যাদা বৃদ্ধি এবং শিক্ষকদের পেশাগত উন্নয়নে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। এ ধরনের পদোন্নতি শুধু শিক্ষকদের জন্য নয়, পুরো শিক্ষাব্যবস্থার জন্য একটি উন্নত কাঠামো তৈরি করবে, যা ভবিষ্যতে দেশের স্বাস্থ্যসেবা খাতে দক্ষ টেকনোলজিস্ট তৈরি করতে সহায়ক হবে

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ